logo

শিরোনাম

মুন্সীগঞ্জ আদালতের বিচারকার্যে অনন্য গতিশীলতায় চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট

নিউজ সেভেন্টি ওয়ান ডট টিভি ডেস্ক
প্রতিবেদন প্রকাশ: ১৮ মার্চ, ২০২৫ | সময়ঃ ১২:০০
photo
মুন্সীগঞ্জ আদালতের বিচারকার্যে অনন্য গতিশীলতায় চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট

নিজস্ব প্রতিবেদক:
মুন্সীগঞ্জ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারকার্যে অনন্য গতিশীলতায় বিচারক গাজী দেলোয়ার হোসেন। বিচারকার্য পরিচালনা ও আদালতে আসা বিচার প্রার্থীদের নিয়ে ব্যাপক ভূমিকা পালন করে আসছে তিনি। চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গাজী দেলোয়ার হোসেন এর আগে ঠাকুরগাঁও জেলার অতিরিক্ত জেলা ও দায়রা জজ হিসেবে দায়িত্ব পালন করেছেন।

 

গত ২০২৪ সালের ১৯ সেপ্টেম্বর তিনি মুন্সীগঞ্জ চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক হিসেবে যোগদান করেন। এর পর হতে মুন্সীগঞ্জ আদালতের সকল ম্যাজিস্ট্রেট গনদের সাথে ন্যায় বিচার প্রতিষ্ঠার লক্ষ্যে মত বিনিময় করে বিচারকার্য পরিচালনা করে আসছেন। আদালতের দুর্নীতি বিষয়ে সকল স্টাফদের সাথে আলোচনা করেন। তিনি নিজের বিচার আদালতে আসা বিচারপ্রার্থীদের সামাজিকতা ও শান্তির লক্ষ্যে উভয়পক্ষকে মামলার মীমাংসা জন্য আদালতের গুরুত্বপূর্ণ সময় ব্যয় করেন। এছাড়াও তিনি আদালতে বিচার কার্য পরিচালনা করার সময় মূল্যবান সময় ব্যয় করে অনেক মামলায় বাদী ও বিবাদীদের মধ্যে মীমাংসা করে দিয়েছেন। এতে আদালতে আসা সাধারণ মানুষ হাসি মুখে বাড়ি ফিরে যায়। মামলা নিষ্পত্তি হওয়া একাধিক বিচার প্রার্থী মানুষের সাথে কথা হলে তারা জানান, মামলা নিষ্পত্তি হতে বহু সময় ব্যয় করতে হয়। তবে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের বিচারক আমাদের মামলা উভয় পক্ষের সাথে কথা বলে অতি সহজে মীমাংসা করে দিয়েছেন। এতে আমরা এই আদালতে এসে খুব দ্রুত মামলা শেষ করতে পেরেছি। তারা আরো বলেন এমন বিচারক প্রতিটি আদালতে থাকলে আমাদের মতো সাধারণ মানুষ এলাকায় মীমাংসা করে হয়রানি না হয়ে আদালতে এসে মামলা শেষ করতে সুবিধা হয়।

 

এছাড়াও বিচারক আদালতে কোন দুর্নীতি হলে ক্ষতিগ্রস্ত মানুষ অতি সহজে দুর্নীতি ব্যতীত সেবা পাওয়ার জন্য হট লাইন চালু করেন। হট লাইলের জন্য একটি নিদিষ্ট মোবাইল নাম্বার দিয়ে আদালতের প্রতিটি দেয়ালে একটি করে ব্যানার লাগিয়ে দিয়েছেন। এতে বলা হয়েছে আদালতের বিভিন্ন সেবার ফি শুধু কোর্ট ফি এর মাধ্যমে গ্রহণ করা হয়। এতে আরো বলা হয়েছে আদালতের সেবা পেতে নগদ টাকার লেনদেন অবৈধ। অবৈধ লেনদেন সেবা পেতে যেকোনো হয়রানির শিকার হলে নেজারত শাখার ম্যাজিস্ট্রেট এর ০১৫৪০৫৭১১৭৫ নাম্বারে যোগাযোগ করার ব্যবস্থা করেছেন। ন্যায় ও দক্ষ বিচারক হিসেবে চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট তিনি নিজেই আদালতের বিভিন্ন এজলাস ও বারান্দায় একা ঘুরে বিভিন্ন সমস্যা ও দুর্নীতি হয় কিনা তা পর্যবেক্ষণ  করেন।

 

আদালতে আসা বিচার প্রার্থীদের জন্য ভবনের বারান্দায় বসার জন্য কাঠের বেঞ্চ, পরিষ্কার পানি পান করার জন্য সুপেয় পানির ব্যবস্থা করেছেন। তাছাড়া কোর্ট হাজতখানায় হাজতীদের বই পড়ার জন্য কোর্ট হাজতখানা লাইব্রেরির ব্যবস্থা করেছেন। তাছাড়াও মামলার কোন সাক্ষী প্রবাসে থাকলেও তিনি তথ্যপ্রযুক্তির মাধ্যমে প্রবাসে থেকে সাক্ষ্য দেয়ার ব্যবস্থা করেছেন। এতে আদালতে আসা বিচার প্রার্থীরা বিচারকের এমন কাজের সাধুবাদ জানিয়েছেন।

 

চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালত ভবন ঘুরে দেখা গেছে। ভবনটির অষ্টম তলা হতে নীচ তলা পর্যন্ত প্রতিটি দেয়ালে দুর্নীতি বাজ ব্যক্তির বিরুদ্ধে ব্যবস্থা নেওয়ার জন্য মোবাইল নাম্বার সহ একটি করে ব্যানার দেখা গেছে। এছাড়াও ভবনটির প্রতিটি তলায় একটি করে পানি ফিলটার বসানো হয়েছে। আদালত পরিষ্কার পরিচ্ছন্ন রেখে বিচারকার্য পরিচালনা করা করা হচ্ছে।
এর আগেও চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গাজী দেলোয়ার হোসেন কারাগার থেকে আনা হাজতীদের আদালতে উঠানোর সময় ব্যতীত বাকি সময় কাটানোর বিষয়ে ও বিভিন্ন বিষয় শিখা ও জানার জন্য কোর্ট হাজতখানা লাইব্রেরির ব্যবস্থা করেছেন। এতে প্রধান অতিথি থেকে লাইব্রেরিটি উদ্বোধন করেন মুন্সীগঞ্জ সিনিয়র জেলা ও দায়রা জজ কাজী আবদুল হান্নান। বিষয়টি নিশ্চিত করেন আদালতের নেজারত বিভাগের নাজির মো: আবু হানিফ।

 

তাছাড়া চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট কর্মদক্ষতা বৃদ্ধির উপর আদালতের সকল কর্মচারীদের নিয়ে প্রশি¶ণ কর্মশালার ব্যবস্থা করেছেন। সঠিক নিয়মে বিচারকার্য পরিচালনা করার জন্য আইনজীবীদের নিয়ে মতবিনিময়সহ সরকারি আইনজীবীদের নিয়ে কর্মশালা করেন।


এ ব্যাপারে জেলা আইনজীবী সমিতির সভাপতি অ্যাডভোকেট মো: জাকারিয়া মোল্লা বলেন, দুর্নীতির বিরুদ্ধে আদালত যে ভূমিকা পালন করার চেষ্টা করছেন আমরাও তাদের সাথে একমত। আমরাও বিচারকদের সাথে দুর্নীতির বিরুদ্ধে কঠোর দায়িত্ব পালন করবো। চীফ জুডিসিয়াল ভবনের কোর্ট হাজতখানা লাইব্রেরি ও বিচার প্রার্থীদের সুপেয় পানির ব্যবস্থা করার বিষয়ে জানতে চাইলে তিনি বলেন, আমাদের চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গাজী দেলোয়ার হোসেন মহোদয় আসার পর ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের অনেক কিছুই পরিবর্তন করেছেন। তার এমন মহৎ কাজের জন্য অনেক অনেক সাধুবাদ জানাই। এতে বিচার প্রার্থী আসা মানুষেরা একটু হলেও সুবিধা ভোগ করবে।

 

এ ব্যাপারে জেলা ও দায়রা জজ আদালতের পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট হালিম হোসেন জানান, চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট গাজী দেলোয়ার হোসেন স্যার মুন্সীগঞ্জে আসার পর আদালতের অনেক কিছু পরিবর্তন করেছেন। আদালতের স্টাফদের তিনি সঠিকভাবে কাজ করার জন্য ব্যাপক পরামর্শ দিয়ে থাকেন। বিচার প্রার্থীদের যেন কোন কষ্ট না হয় সেদিকে তিনি নিয়মিত খেয়াল রাখেন। এছাড়াও তিনি মুন্সীগঞ্জ আসার পর আমাদের নিয়ে মত বিনিময়সহ নানা বিষয়ে কর্মশালা করেছেন। বিচার প্রার্থী মানুষ অতি সহজে তার আদালত হতে ন্যায় বিচার পেয়ে হাসিমুখে বাড়ি ফিরেছেন। আমি তার এমন মহৎ কাজের জন্য অনেক অনেক ধন্যবাদ জানাই।

 

জেলা আইনজীবী সমিতির সাবেক সাধারণ সম্পাদক ও অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট রোজিনা ইয়াসমিন বলেন, আমি চীফ জুডিসিয়াল ম্যাজিস্ট্রেট আদালতের সরকারি আইনজীবী হিসেবে দায়িত্ব পালন করছি। আমি স্যারের আইনি দক্ষতা দেখেছি। স্যার আদালতের মূল্যবান সময় ব্যয় করে হলেও অনেক মামলা উভয়পক্ষের সাথে কথা বলে মামলা নিষ্পত্তি করেছেন। এতে বিচারপ্রার্থী সাধারণ মানুষ হাসিমুখে বাড়ি ফিরেছে। স্যারের বিচারকার্য পরিচালনায় অনেক কিছুই শিখা ও জানার আছে। আমি সেটা পেয়েছি।  

 

এ ব্যাপারে অতিরিক্ত পাবলিক প্রসিকিউটর অ্যাডভোকেট মোস্তাফিজুর রহমান বলেন, আমাদের বর্তমান সিজেএম স্যার আসার পর হতে ম্যাজিস্ট্রেট কোর্টের অনেক কিছুই পরিবর্তন আনতে পেরেছেন। বিচার প্রার্থীদের জন্য অনেক ভালো কাজ করেছেন।

 

আইনজীবী সমিতির সিনিয়র অ্যাডভোকেট কাজী নজরুল ইসলাম অসীম বলেন, দুর্নীতি একটা বড় সমস্যা। এ সমস্যা সমাধান করার জন্য আমাদের সকলের ঐক্যবদ্ধ হতে হবে। যদিও আদালতের বিচারকরা দুর্নীতির পক্ষে না। আমরা সকলে একমত হয়ে দুর্নীতির বিরুদ্ধে রুখে দাঁড়ালে তা দমন করা সম্ভব হবে বলে আমি মনে করি। এছাড়াও স্যারের কর্মদক্ষতা ও বিচারকার্য পরিচালনা আমার কাছে ভালো মনে হয়েছে। আসা করি এমন বিচারক মুন্সীগঞ্জে অনেক দিন থাকলে আদালতে আসা বিচারপ্রার্থী সাধারণ মানুষের জন্য আরো ভালো কিছু হবে।

  • নিউজ ভিউ 774