জাহাঙ্গীর আলম : মুন্সীগঞ্জের শ্রীনগরে এক ভয়াবহ সড়ক দুর্ঘটনায় যাত্রীবাহী বাসের ছাদ উড়ে গেলেও চালক থামাননি বাসটি—বরং ১০ কিলোমিটার ছুটিয়ে নিয়ে গেছেন আহত যাত্রীদের নিয়ে।
বৃহস্পতিবার ১৭ এপ্রিল রাত সাড়ে ৯টার দিকে ঢাকা-মাওয়া এক্সপ্রেসওয়ের শ্রীনগরের সমষপুর এলাকায় এ ঘটনা ঘটে।
বরিশাল এক্সপ্রেস লিমিটেড নামের বাস ভর্তি জন যাত্রী ছিল, যাদের মধ্যে অন্তত ৫ জন আহত হন। দুর্ঘটনার ভয়াবহতা ও চালকের দায়িত্বহীনতা নিয়ে সামাজিক মাধ্যমে উদ্বেগ দেখা দিয়েছে।
ঘটনাটি শুরু হয় যখন দ্রুতগতির বাসটি প্রথমে একটি মাইক্রোবাসকে ধাক্কা দেয়, পরে একটি কাভার্ডভ্যান ও প্রাইভেটকারের সঙ্গে সংঘর্ষে পড়ে। শেষ ধাক্কায় বাসের ছাদ সম্পূর্ণরূপে উড়ে গিয়ে রাস্তায় পড়ে যায়। যাত্রীরা বারবার চালককে বাস থামাতে বললেও তিনি কর্ণপাত করেননি। বরং ছাদবিহীন বাস চালিয়ে ৫ কিলোমিটার দূরে পদ্মা সেতু উত্তর থানার কুমারভোগ এলাকায় পৌঁছান, যেখানে স্থানীয় জনতা ‘বাঁচাও বাঁচাও’ চিৎকার শুনে বাসটি আটকে দেন।
পরে হাইওয়ে পুলিশ, পদ্মা সেতু উত্তর থানা ও শ্রীনগর ফায়ার সার্ভিসের সদস্যরা ঘটনাস্থলে গিয়ে আহতদের উদ্ধার করেন। গুরুতর আহত যাত্রী শাহিনকে প্রথমে শ্রীনগর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে, পরে ঢাকা মেডিকেল কলেজ হাসপাতালে পাঠানো হয়। আহত বাকিদের স্থানীয়ভাবে চিকিৎসা দেওয়া হয়। বাসটির চালক ও হেলপার ঘটনাস্থল থেকে পালিয়ে যান বলে জানান পদ্মা সেতু উত্তর থানার ওসি মো. জাকির হোসেন।
এই দুর্ঘটনা শুধু একটি সড়ক দুর্ঘটনা নয়, এটি আমাদের দেশে চালকদের প্রশিক্ষণ, দায়িত্ববোধ এবং যাত্রী নিরাপত্তা ব্যবস্থার সংকটকেই সামনে এনেছে। সময় এসেছে বাস মালিক, প্রশাসন ও আইনপ্রয়োগকারী সংস্থাগুলোর আরও জবাবদিহিতামূলক ভূমিকা নিশ্চিত করার। যেন আর কোনো যাত্রী ছাদহীন বাসে মৃত্যুর মুখে না ছুটে।