মুন্সীগঞ্জে জাল ভোটের তথ্য সংগ্রহে সাংবাদিকদের কেন্দ্রে ঢুকতে প্রিজাইডিং কর্মকর্তার বাঁধা

নিউজ ডেস্ক | news71.tv
আপডেট : ২২ মে, ২০২৪
নিউজ সেভেন্টি ওয়ান ডট টিভি ডেস্ক
মুন্সীগঞ্জে জাল ভোটের তথ্য সংগ্রহে সাংবাদিকদের কেন্দ্রে ঢুকতে প্রিজাইডিং কর্মকর্তার বাঁধা

নিজস্ব প্রতিবেদক: মুন্সিগঞ্জের লৌহজংয়ে জাল ভোটের তথ্য যাচাইয়ে ভোটকেন্দ্রে প্রবেশের চেষ্টাকালে কেন্দ্রের ফটক বন্ধ করে সাংবাদিককে বাঁধা প্রদানের ঘটনা ঘটেছে।

 

মঙ্গলবার বেলা সাড়ে ৩টার দিকে লৌহজং উপজেলার পিংরাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রে যমুনা টেলিভিশনের স্টাফ করেসপন্ডেন্ট আরাফাত রায়হান সাকিব সহ স্থানীয় কয়েকজন সাংবাদিকদের সাথে এঘটনা ঘটে।

মুন্সীগঞ্জে জাল ভোটের তথ্য সংগ্রহে সাংবাদিকদের কেন্দ্রে ঢুকতে প্রিজাইডিং কর্মকর্তার বাঁধা

 

কেন্দ্রে দায়িত্বে প্রিজাইডিং কর্মকর্তা মিজানুর আহসান চৌধুরী কেন্দ্রে পুলিশের ইনচার্জ রতন ও আনসার সদস্যদের দিয়ে কেন্দ্রের ফটক সাংবাদিকদের জন্য বন্ধ করে দেয় বলে অভিযোগ উঠেছে। মিজানুর আহসান চৌধুরী উপজেলা সমবায় কর্মকর্তার হিসাবেও দায়িত্ব পালন করছেন। সাংবাদিক আরাফাত রায়হান জানান, পিংরাইল সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয় কেন্দ্রের জালভোট দেওয়ার অভিযোগে উপজেলা পরিষদের দুই চেয়ারম্যান প্রার্থী সমর্থকদের মধ্যে হট্টগোল ও একটি গাড়ি ভাংচুরের খবর পেয়ে ওই এলাকায় যাই।

 

কেন্দ্রে গিয়ে প্রিজাইডিং অফিসারকে জিজ্ঞাসা করলে এমন কোন ঘটনা বলে ঘটেনি বলে দাবি করেন তিনি। এসময় বিষয়টি যাচাইয়ের জন্য সেখানে অবস্থান করলে সময়শেষ বলে প্রিজাইডিং অফিসার ১০মিনিটের সময় শেষের কথা বললে কেন্দ্র ছাড়তে বলে। পরে বাইরে এসে গাড়ি ভাংচুরের তথ্য ভিডিও মানুষের অভিযোগ ধারন করে আবারো এ বিষয়ে প্রিজাইডিং অফিসারের বক্তব্য নিতে ভোট কেন্দ্রে প্রবেশের চেষ্টা করলে প্রিজাইডিং অফিসার মিজানুর আহসান চৌধুরী কেন্দ্রে পুলিশের ইনচার্জ রতন ও আনসার সদস্যদের দিয়ে কেন্দ্রের ফটক সাংবাদিকদের জন্য বন্ধ করে দেয়।

 

এসময় তিনি আর কোন সাংবাদিক কেন্দ্রে প্রবেশ করতে পারবে না বলেন। আরাফাত আরো বলেন, নির্বাচন কমিশনের নির্দেশনা অনুযায়ী কক্ষের ভিতর ১০মিনিট থাকা যাবে না। কিন্তু অনৈতিকভাবে তিনি কেন্দ্রেই আমাদের প্রবেশ করতে দেয়নি। তার নির্দেশে ফটক বন্ধের ঘটনাটি আমাদের কাছে ভিডিও আছে। গনমাধ্যমের কাজকে বাঁধাগ্রস্থ করার এ বিষয়ে আমি সংশ্লিষ্ট উর্ধ্বতনদের ব্যবস্থা গ্রহণের দাবি জানাচ্ছি।

 

এবিষয়ে পিংরাইল কেন্দ্রের দায়িত্বে থাকা প্রিজাইডিং অফিসার মিজানুর আহসান চৌধুরী বলেন, আমাদের প্রশিক্ষণে বলা হয়েছে একজন সাংবাদিক ১০মিনিট থাকতে পারবে কেন্দ্রে। ওনি ১০মিনিট ছিলো, পরে ওনাকে বলার পর ওনি গেইটের বাইরে গিয়ে আবার আসতে চাইছিলেন। কোথায় প্রশিক্ষণে সাংবাদিকদের ১০ মিনিট কেন্দ্রে থাকার নিয়ম এমন প্রশ্নে তিনি বলেন, আপনার আরো কথা থাকলে আপনি ইউএনও স্যারের সাথে কথা বলেন।

 

এদিকে গনমাধ্যমে কাজে বাঁধাগ্রস্থ এমন ঘটনার নিন্দা জানিয়েছে স্থানীয় সাংবাদিকরা। বিক্রমপুর টেলিভিশন জার্নালিস্ট এসোসিয়েশন সভাপতি কাজী নজরুল ইসলাম বলেন, সুষ্ঠু নির্বাচনে জন্য সাংবাদিকরা নির্বাচন কমিশনের সহযোগী হিসাবর গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে থাকে। ওই প্রিজাইডিং কর্মকর্তার এম কর্মকাণ্ডের ফলে সাংবাদিকদের কাছে প্রশাসনের ভাবমূর্তি নষ্ট হবে। আইন জেনে না জেনে খেয়াল খুশি মত আচরনের কারনে ভোট কেন্দ্রে বিশৃঙ্খলাও দেখা দিতে পারে। তাই তার বিষয়ে যথাযথ ব্যবস্থা গ্রহনের দাবি আমাদের।  পরবর্তীতে অন্যরা এমন আচরন করতে পারবে না, এবং ভালো করে প্রশিক্ষণ নিয়ে আসবে।

 

এবিষয়ে মুন্সিগঞ্জ প্রেসক্লাবের সাধারণ সম্পাদক সুজন হায়দার জনি বলেন, আইনের ব্যত্যয় ঘটিয়ে সাংবাদিকদের কেন্দ্রে প্রবেশের এমন কাজ একজন প্রিজাইডিং অফিসার করতে পারে না। এটি গনমাধ্যমের স্বাধীনতাকে বাঁধাগ্রস্ত করার পায়তারা বলে মনে করছি।

 

এবিষয়ে লৌহজং ও টঙ্গীবাড়ী উপজেলা পরিষদ নির্বাচনের নির্বাচনে দায়িত্বপ্রাপ্ত রিটার্নিং কর্মকর্তা ও অতিরিক্ত জেলা প্রশাসক (সার্বিক) আশরাফুল আলম বলেন, গনমাধ্যমকর্মীদের কার্ড দেওয়া হয়েছে কাজ করার জন্য। তারা কেন্দ্রে যেকোন সময় প্রবেশ করতে পারবে। ওই প্রিজাইডিং অফিসারের এমন কার্যক্রমের বিষয়ে খোঁজ নিয়ে অবশ্যই ব্যবস্থা গ্রহণ করা হবে।

 

এই বিষয়ে সাংবাদিক আরাফাত রায়হান সাকিব আজ বুধবার জেলা নির্বাচন কমিশনারের কাছে ওই কর্মকর্তার বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন।