জিতু রায়: উৎসবমুখর পরিবেশের মধ্য দিয়ে শনিবার শেষ হয়েছে মুন্সিগঞ্জ পৌরসভা নির্বাচন। পৌরবাসীরা ভোট দিয়ে নির্বাচিত করেছেন তাদের প্রতিনিধিদের। নির্বাচনে অংশগ্রহণকারী কাউন্সিলর প্রার্থীরা ভোটারদের বাড়িতে বাড়িতে গিয়ে নির্বাচনের পরেও পাশে থাকার আশ্বাস দিয়ে ভোট প্রার্থনা করেছিলেন। ভোটারদের কাছে করেছিলেন নানা প্রতিশ্রুতি।
এমন প্রতিশ্রুতি রক্ষা করার দৃষ্টান্ত পাওয়া গেলো মুন্সীগঞ্জ পৌরসভার ২নং এবং ৬নং ওয়ার্ডে। নির্বাচনের পরদিন রবিবার এসব ওয়ার্ডে সরোজমিনে গিয়ে দেখা যায়, পৌরসভার ২ নং ওয়ার্ডের নব-নির্বাচিত কাউন্সিলর সোহেল রানা রানু মানিকপুর গ্রামের মৃত মনিরা বেগমের বাড়িতে তাঁর পরিবারের শোকার্ত সদস্যদের কাছে ছুটে গিয়েছেন। এই নারী সমর্থক মৃত মনিরা বেগম নির্বাচনের ২ দিন পূর্বে মৃত্যুবরণ করেন। নব-নির্বাচিত কাউন্সিলর প্রার্থীকে নির্বাচনের পরদিন কাছে পেয়ে কান্নায় ভেঙে পরে পরিবারের সদস্যরা।
সোহেল রানা রানু বলেন, আমার নির্বাচনে সমর্থন জানিয়ে শুরু থেকেই এই পরিবারটি কঠোর পরিশ্রম করেছে। আমি তাদের কাছে কৃতজ্ঞ। আমি সকল সময়ে নিজ উদ্যেগে এই পরিবারটির খোঁজ খবর রাখবো।
তিনি আরো বলেন, ওয়ার্ডের উন্নয়নের জন্য প্রতিটি গ্রামের শিক্ষিত তরুনদের নিয়ে বিভিন্ন উন্নয়ন পরিকল্পনা গ্রহণ করবো। পাশাপাশি ওয়ার্ডের সমস্যাগুলো সমাধানের জন্য প্রতিটি এলাকার মুরুব্বিদের অভিজ্ঞতা এবং দক্ষতার সমন্বয়ে কাজ করবো। একটি আধুনিক ওয়ার্ড গড়ে তুলতে কাজ করবো। মানুষের ভোটের প্রতিদান কাজের মাধ্যমে দিতে চাই।
অপরদিকে মুন্সীগঞ্জ পৌরসভা ৬ নং ওয়ার্ডের নব-নির্বাচিত কাউন্সিলর সত্তার মুন্সির এলাকায় উৎসবের ভিন্ন চিত্র দেখা গিয়েছে। বিজয়ী কাউন্সিলর প্রার্থী সাত্তার মুন্সী নিজেই
শুভেচ্ছা বিনিময় করতে সমর্থকদের নিয়ে গ্রামের প্রতিটি ঘরে ঘরে পৌছে গিয়েছেন। নির্বাচনের পূর্বে ভোট প্রার্থণা করতে যেমন গিয়েছিলেন গ্রামবাসীদের কাছে তেমনি বিজয়ের পরদিন সমর্থকদের নিয়ে জয়ের আনন্দ ভাগাভাগি করতে ছুটে গেছেন ভোটারদের বাড়িতে বাড়িতে। রবিবার ৬ নং ওয়ার্ডের রনছ পারুল পাড়া এলাকায় উৎসবের আমেজ ছড়িয়ে পড়ে প্রতিটি ঘরে ঘরে।
এ সময় গ্রামবাসীরা তাদের পছন্দের নির্বাচিত প্রার্থীকে ফুলের মালা পড়িয়ে দিয়ে মিষ্টিমুখ করে বরণ করে নেয়। গ্রামের সহজ- সরল নারীদের কেউ কেউ আবার টাকার মালা বানিয়ে পড়িয়ে দিয়েছেন তার গলায়। শত-শত তরুন একে অন্যকে রং মাখিয়ে বিজয় উদযাপন করেছে।
বেসরকারি একটি ব্যাংকের কর্মকর্তা আমান উল্লাহ আমান জানান, এই বিজয় প্রকৃতপক্ষে সাধারণ মানুষের বিজয়। সাত্তার মুন্সী একজন উচ্চ শিক্ষায় শিক্ষিত সমাজকর্মী। নির্বাচনের বহু পূর্বেই সে মানুষের মন জয় করেছেন। ভোটাররা এখন তাদের ওয়ার্ডের উন্নয়নের জন্য তার হাতে আনুষ্ঠানিকভাবে এই দায়িত্ব তুলে দিলেন।
পল্লী চিকিৎসক রানা বলেন, আমরা তরুন প্রজন্ম আজ আনন্দিত। কেননা আমাদের তরুনদের সমর্থনের এই প্রার্থীকে ওয়ার্ডের ভোটাররা মূল্যায়িত করেছেন। প্রতিটি গ্রামের তরুন প্রজন্ম সাত্তার মুন্সীর সমাজ বিনির্মানের আদর্শে দীর্ঘদিন ধরেই কাজ করছি।
ব্যপক এই জনসমর্থনের বিষয়ে জানতে চাইলে সাত্তার মুন্সী জানান, আমি সর্বদা চেষ্টা করেছি সমাজের উন্নয়নে কাজ করতে। আমার ওয়ার্ডবাসী আমাকে যে সম্মানে সম্মানিত করেছেন আমি এর প্রতিদান দিতে চাই কাজের মাধ্যমে।
ওয়ার্ডের উন্নয়নের সর্ব-স্তরের মানুষের পরামর্শে একসাথে কাজ করবো। আগামীদিনে ৬ নং ওয়ার্ডকে মাদকমুক্ত সবুজে ঘেরা একটি ওয়ার্ডে গড়ে তুলবো।